একুশে সিলেট ডেস্ক
সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নবনিযুক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) নিয়োগকে প্রত্যাখ্যান করে নবাগত পিপির কার্যালয়ে তালাবন্ধ করে দিয়েছে আইনজীবিরা।
রোববার সকাল ৯টায় সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নবনিযুক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এটিএম ফয়েজ উদ্দিন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান মুজিবের পিপি কক্ষ তালাবন্ধ করে আইনজীবিরা। পরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে বিক্ষোভ করেন আইনজীবিরা। একপর্যায়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ২য় তলায় অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান মুজিবকে দেখে আইনজীবীরা ক্ষেপে যান এবং থাকে লাঞ্ছিত করেন। আইনজীবির সমিতির সাধারণ সম্পাদকের হস্তক্ষেপে স্থান ত্যাগ করেন মুজিব।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ফোরামের সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মুহিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বদরুল আহমদ চৌধুরীর পরিচালনায় বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সাবেক জিপি সিনিয়র অ্যাডভোকেট আক্তার হোসেন খান, মহানগর বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম আহমদ সিদ্দিকী, সিলেট জেলা আইনজীবি সমিতি সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ আশরাফুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি অ্যাডভোকেট হাবিুবুর রহমান হাবিব, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসান আহমদ পাটওয়ারী রিপন, অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমদ, অ্যাডভোকেট আব্দুল ফাত্তাহ তুহেল, অ্যাডভোকেট এজাজ উদ্দিন, অ্যাডভোকেট আনছারুজ্জামান, অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমদ, অ্যাডভোকেট উবাদুর রহমান ফাহমি, অ্যাডভোকেট শাহজাহান সিদ্দিকি, অ্যাডভোকেট আয়েশা সিদ্দিকা, অ্যাডভোকেট তানভীর আক্তার খান, অ্যাডভোকেট জাফর ইকবাল তারেক, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আব্দুল মুকিত অপি, অ্যাডভোকেট আলী হায়দার ফারুক, অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান, অ্যাডভোকেট সাজেদুল ইসলাম সজিব, অ্যাডভোকেট মোবারক হোসেন, অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী, অ্যাডভোকেট নুর আহমদ, অ্যাডভোকেট আব্দুল হাই রাজন, অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক খান রাজ, অ্যাডভোকেট তাজ রিহান জামান, অ্যাডভোকেট বদরুল আলম লিটন, অ্যাডভোকেট শামিম আহমদ, অ্যাডভোকেট হাবিব আহমদ, অ্যাডভোকেট মঞ্জুর এলাহী সামি, অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম রায়হান, অ্যাডভোকেট নাজমুল হুদা সাহান, অ্যাডভোকেট সাহেদ আহমদ, এডভোকট খুরশেদ আলম, অ্যাডভোকেট গোলাম রসুল সুমেল, অ্যাডভোকেট মুমিনুল হক, অ্যাডভোকেট মোজাক্কির হোসেন, অ্যাডভোকেট নাছির উদ্দিন সাদিক, অ্যাডভোকেট রুহুল আমীন, অ্যাডভোকেট কামরুল আমিন, অ্যাডভোকেট কাজী সেবা আক্তার, অ্যাডভোকেট সাহেদ আহমদ, অ্যাডভোকেট জাবেদ আহমদ, অ্যাডভোকেট খায়রুল আমিন, অ্যাডভোকেট স্বপন আহমদ প্রমুখ।
এসময় আইনজীবিরা বলেন, সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর পদে নিয়োগপ্রাপ্ত অ্যাডভোকেট এ টি এম ফয়েজ একজন বহুরূপি ও বিতর্কিত ব্যক্তি। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে বিএনপিতে আসলেও বিগত খুনি ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দীর্ঘ আন্দোলনে তার ভ‚মিকা ছিল রহস্যজনক। দলে তার সাংগঠনিক নিষ্ক্রিয়তা, অনুপস্থিতি ও দলীয় নেতাকর্মীদের আইনী সেবা প্রদানে তার বিতর্কিত ভ‚মিকার কারণে একসময় আইনজীবি ফোরামের সভাপতির পদ থেকে তাকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। তিনি দীর্ঘ দুই বৎসর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রান্ট হয়ে স্বপরিবারে স্থায়ীভাবে আমেরিকায় পাড়ি জমান। ৫ আগষ্টের খুনি হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর পর দেশে তিনি পিপি হওয়ার জন্য দৌঁড়ঝাপ শুরু করেন এবং সংশ্লিষ্টদেরকে ভুল বুঝিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদটি বাগিয়ে নেন। যা সিলেটের আইন অঙ্গণের সর্বস্তরের আইনজীবিদের মর্মাহত করেছে। নেতৃবৃন্দ সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি বিবেচনা করে সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর পদে নিয়োগপ্রাপ্ত এটি এম ফয়েজকে পরিবর্তনের জোর দাবি জানান।
সিলেটে বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের মানববন্ধন:
রোববার দুপুরে আদালত চত্বরে সিলেটের জেলা ও মহানগর আদালতসমূহের পিপি-জিপিসহ প্রকাশিত বিতর্কিত তালিকা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিল সিলেটের নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন, সিলেটের আদালতে জিপি হিসেবে যাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তিনি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এবং পিপি হিসেবে যাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছি তিনিও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।
এমনকি বিগত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে তিনি প্রবাসে ছিলেন। এ ছাড়া নিয়োগপ্রাপ্ত আইন কর্মকর্তাদের তালিকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিরোধী এবং ফ্যাসিবাদের দোসররাও স্থান পেয়েছে। যা খুবই দুঃখজনক।
আদালতের পরিবেশ ও সুষ্ঠু বিচারকার্য পরিচালনার স্বার্থে উক্ত পিপি ও জিপি তালিকা বাতিল করে আইন পেশায় সৎ, দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন তালিকা প্রকাশের জোর দাবি জানান তাঁরা।
বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিল সিলেটের সভাপতি মো. আলীম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল খালিকের পরিচালনায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিল সিলেটের সেক্রেটারি মোহাম্মদ আব্দুর রব, যুগ্ম সম্পাদক আজীম উদ্দীন, জামিল আহমদ রাজু, সহকারী সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন শামীম, সিরাজুল ইসলাম, মাসুদ আহমদ মহসিন, জুনেদ আহমদ, ইয়াসিন খান, নাজমুল ইসলাম, নাজমুল হুদা, আবজল মিয়া তালুকদার, রহমত আলী, আসাদুল্লাহ, আমিনুল ইসলাম চৌধুরী রেদওয়ান, মইনুল ইসলাম, আফজালুর রহমান, আব্দুল কাইয়ুম, মুমিনুজ্জামান, মাহবুব আহমদ ও মোর্শেদ আহমদ প্রমুখ।
Leave a Reply